✍️ এস. এম. জাকিরুল আলম মেহেদী
লেখক, সাংবাদিক ও শিক্ষক
জীবনের প্রতিটি কঠিন অধ্যায় মানুষকে নতুনভাবে গড়ে তোলে। রাজনীতির অঙ্গনও তার বাইরে নয়। যেখানে প্রতিদিনের সংগ্রাম, সমালোচনা, ও প্রতিকূল সময় একজন নেতাকে পরিণত করে তুলতে পারে অধিক সংযত, দূরদর্শী ও স্থিতধী ব্যক্তিত্বে।
তারেক রহমানকে নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহুদিন ধরেই মতবিরোধ ও বিতর্কের স্রোত বয়ে চলেছে। সংবাদপত্র, টেলিভিশন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সব জায়গাতেই তাঁর নাম এসেছে কখনো প্রশংসায়, কখনো সমালোচনায়। কিন্তু সমালোচনার ভেতর দিয়ে একজন মানুষ কখনো কখনো আরও পরিশুদ্ধ হয়ে ওঠেন এটাই জীবনের বাস্তব নিয়ম।
সম্প্রতি বিবিসি বাংলায় তাঁর এক সাক্ষাৎকারে আমি যেন দেখলাম এক ভিন্ন তারেক রহমানকে। পরিণত, সংযত, যুক্তিবোধসম্পন্ন একজন রাজনীতিক। তাঁর বক্তব্যে ছিল রাজনৈতিক দর্শনের ভারসাম্য, অর্থনৈতিক চিন্তার বাস্তবতা, আর গণতন্ত্রের প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস।
সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক দিক ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাশীল মনোভাব। এই শ্রদ্ধা কোনো কৌশল নয়, বরং নেতৃত্বের পরিপক্বতার প্রতিচ্ছবি।
আজকের রাজনৈতিক বিভাজনের যুগে এমন মনোভাবই পারে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্ম দিতে—যেখানে মতের ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু ঘৃণা থাকবে না; প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু প্রতিহিংসা থাকবে না।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম ও সততা, এবং বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ় নেতৃত্ব ও ভদ্রতা এই দুই প্রজন্মের উত্তরাধিকার যেন আজ মিলিত হয়েছে তাঁরেক রহমানের নতুন ব্যক্তিত্বে।
প্রবাস জীবনের দীর্ঘ অধ্যায় হয়তো তাঁকে দিয়েছে চিন্তার গভীরতা, আত্মসমালোচনার সাহস, আর ভবিষ্যৎ নির্মাণের দৃষ্টি।
নেতৃত্ব মানে শুধু বক্তৃতা নয় -শ্রবণ, সহিষ্ণুতা ও সংলাপের চর্চা।
তারেক রহমান যদি এই গঠনমূলক ও মানবিক ধারায় অবিচল থাকেন, তবে তিনি শুধু একটি দলের নয়, বরং একটি প্রজন্মের নেতৃত্বে নতুন আশা জাগাতে পারেন।
রাজনীতি তখনই পরিণত হয়, যখন তা আত্মশুদ্ধির পথ ধরে।
আর সেই পথেই হয়তো আজ হেঁটে যাচ্ছেন একজন পরিপক্ব তারেক রহমান-
সমালোচনা থেকে সংলাপে,
বিতর্ক থেকে প্রজ্ঞায়,
ভবিষ্যতের এক আলোকিত বাংলাদেশ অভিমুখে।