“গ্রীন ফরেস্ট, পিসফুল লাইফ বা সবুজ বন, প্রশান্তির জীবন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক একাধিক অভিজাত শ্রেণীর পুরস্কারপ্রাপ্ত বেতার শ্রোতা সংগঠন সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) বাংলাদেশের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
বুধবার (১ অক্টোবর ২০২৫) সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ জল্লারপাড় গ্রীন ডিসএ্যাবল্ড ফাউন্ডেশন (জিডিএফ)-এ এই উদযাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও রেডিও এক্টিভিস্ট দিদারুল ইকবাল (S21DAL) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক সিলেট বাণী পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ হান্নান।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ বেতারের সাবেক পরিচালক ড. মির শাহ আলম (S21MIR)। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার সিনিয়র সাব এডিটর ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল আজকের সংবাদ২৪.কম এর সম্পাদক ফয়জুল আহমদ, সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক)- সিলেট সিটি ইউনিটের সভাপতি এম এ ওয়াদুদ আল মামুন, শাহপরান ইউনিট, সিলেটের কার্যনির্বাহী সদস্য ও তালুকদার ফাউন্ডেশন, সিলেটের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম এবং গ্রীন ডিসএ্যাবল্ড ফাউন্ডেশন (জিডিএফ)-এর মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক বায়জিদ খান।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান তাছলিমা আক্তার লিমা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক লাবীব ইকবাল, সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক)- শাহপরান ইউনিট, সিলেটের যুগ্ম সম্পাদক মো. নোমান উদ্দিন রায়হান, তালুকদার ফাউন্ডেশন, সিলেটের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মামুন রশিদ, গ্রীন ডিসএ্যাবল্ড ফাউন্ডেশন (জিডিএফ)-এর শিক্ষক আফজল শিকদার, শিক্ষক স্বরুপা বেগম, তাজকিয়া জান্নাত সুইটি, ফাতেমা বেগম, তাহমিনা আক্তার মৌমি, খাদিজাতুল কুবরা শিফা, রেশমা আক্তার রিয়া, রুকসানা বেগম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দৈনিক সিলেট বাণী পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এম এ হান্নান বলেন, শুধু রেডিও শোনা নয়, একটি শ্রোতাক্লাব হিসেবে সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) এর সদস্যবৃন্দ চিঠি-পত্র, স্বাক্ষাৎকার ও অন্যান্য মাধ্যমে নিয়মিত বেতারকে বিভিন্ন মতামত/পরামর্শ দিয়ে অনুষ্ঠানের মান উন্নয়নে সহযোগিতা করার পাশাপশি সমাজের তৃণমূলেও তারা বেতারের তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে।
শুধু তাই নয়, ক্লাবটি সমাজের প্রান্তিক ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, দরিদ্র-অসহায় মানুষের কল্যাণেও তাদের সামর্থ অনুযায়ী সাহায্য করে যাচ্ছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা, জনসচেতনতা এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাবের সুদূরপ্রসারী ভাবনা গুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে। ক্লাবের এই ছোট ছোট ভাবনাগুলো সমাজের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, বৈষম্য হ্রাস এবং টেকসই পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দারুন ভূমিকা রাখবে, যা একটি সুস্থ ও উন্নত সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য।
আমি সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাবের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি। আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তারা সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) এর ২৮ বছরের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরেন এবং দীর্ঘ সাফল্য কামনা করেন।
পরে কেক কাটার মধ্য দিয়ে ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। ১৯৯৭ সালের ১লা অক্টোবর বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিগন্যাল ইন্সপেক্টর অফিস এলাকায় গঠিত “ওয়ার্ল্ড রেডিও ডিএক্স লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশ” যা বর্তমানে সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) বাংলাদেশ নামে পরিচিত।
ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন সংগঠক ও রেডিও এক্টিভিস্ট দিদারুল ইকবাল (S21DAL)। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন, গ্রাম, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদেশে সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক)-এর বহু ইউনিট রয়েছে।
প্রতিটি ইউনিট কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় সতন্ত্র ভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এই ক্লাবের সাথে রাষ্ট্রের গুণীজন, বেতারের কর্মকর্তা, সরকারের সচিব, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, শিল্পী, কবি-সাহিত্যিক, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রী, কুলি-শ্রমিক-দিনমুজুর, কৃষক, প্রতিবন্ধী, ড্রাইভার, জেলে সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সম্পৃক্ত রয়েছেন। যারা ক্লাবের অগ্রযাত্রায় অসাধারণ অবদান রেখেছেন। সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) বাংলাদেশ তাদের প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ।
সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) বাংলাদেশের সদস্যবৃন্দ বিভিন্ন দেশের বেতার অনুষ্ঠান শুনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে, মতামত/পরামর্শ দিয়ে অনুষ্ঠানের মান উন্নয়নে সহযোগিতাসহ বেতারের প্রচার-প্রসার ও শ্রোতা বৃদ্ধি, সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সামাজিক কর্মকান্ডে ভূমিকা রাখে।
ক্লাব থেকে সবসময় বিভিন্ন বেতারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, শ্রোতা সম্মেলন আয়োজন, বিশ্ব বেতার দিবস পালন, বেতার বিষয়ক বিভিন্ন ডিএক্স প্রদর্শনী-সেমিনার আয়োজন, শিক্ষা সফর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্ঞান প্রতিযোগিতার আয়োজন, বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ, ত্রাণ বিতরণ, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, ফ্রি রক্তদান ও রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন, জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের আয়োজন, ফ্রি মাস্ক-হ্যান্ড স্যানেটাইজারসাবান বিতরণ, ফ্রি রেডিও সেট বিতরণ, সেলাই মেশিন বিতরণ সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দিবস পালন করা হয়।
ক্লাবের সদস্যবৃন্দ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ইন্দোনেশিয়া ও চীন এবং বেসরকারী ভাবে ফিলিপাইন ও ভারত ভ্রমণের একাধিক সুযোগ পেয়েছেন যা বেতার ইতিহাসে বিরল।