দিদারুল ইকবাল (সোনালী সন্দ্বীপ) সিলেট ::
সড়কে হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল আরোহীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত একযোগে নগরের ১৮ পয়েন্টে ট্রাফিক আইন মেনে চলায় এসএমপির পক্ষ থেকে তাদের এই ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এরই অংশ হিসেবে নগরের হুমায়ূন রশীদ চত্বরে মহানগর পুলিশের নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী-পিপিএম নিজে রাস্তায় উপস্থিত থেকে হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল চালকদের হাতে গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুলের স্টিক তুলে দেন। ট্রাফিক আইন মেনে হেলমেট পরে যারা মোটরসাইকেল ড্রাইভিং করছিলেন তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেছেন তিনি।
এ সময় পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী বলেন, পুলিশ যেন সেবার মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করে, সে জন্য পুলিশকে উৎসাহিত করা এবং মোটরসাইকেল আরোহীদের পথ নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানো ও হেলমেট পরিধানে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শুধু এসএমপি কমিশনারই নয়, নিরাপদ সড়ক গড়তে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ফুল নিয়ে হাজির হয়েছেন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারাও।
অভিনব এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন নগরীর মেন্দিবাগ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, সোবহানিঘাট পয়েন্টে উপ পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন), নাইওরপুল পয়েন্টে উপ পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি), বন্দরবাজার পয়েন্টে উপ পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন), চৌহাট্টা পয়েন্টে উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), শিবগঞ্জ পয়েন্টে উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ), নয়াসড়ক পয়েন্টে উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর), টিলাগড় পয়েন্টে উপ পুলিশ কমিশনার (পিওএম), লামাবাজার পয়েন্টে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি), সুবিদবাজার পয়েন্টে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর প্রশাসন), মদিনা মার্কেট পয়েন্টে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর অপরাধ), মেজরটিলা পয়েন্টে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ প্রশাসন), রিকাবিবাজার পয়েন্টে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ অপরাধ), আম্বরখানা পয়েন্টে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), কদমতলী মুক্তিযোদ্ধা চত্ত্বরে সহকারী পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ), জিন্দাবাজার পয়েন্টে সহকারী পুলিশ কমিশনার (উত্তর) ও হুমায়ুন রশিদ চত্বরে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ও অন্যান্য অফিসারবৃন্দ।
নগরজুড়ে হাজারের বেশী মোটরসাইকেল চালককে এই শুভেচ্ছা জানানো হয়। কার্যক্রমটি মোটর বাইকারদের মধ্যে ব্যাপক সাঁড়া ফেলেছে এবং অনেকে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। এসময় নগরের আম্বরখানা পয়েন্টে একজন মোটরসাইকেল আরোহী বেতার শ্রোতা সংগঠন সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব (সার্ক) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও হ্যাম রেডিও এক্টিভিস্ট দিদারুল ইকবাল (S21DAL) অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমার গাড়ি থামিয়ে একটি গোলাপ ফুল উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোয় আমি বিস্মিত হয়েছি। ট্রাফিক আইন মেনে হেলমেট পরে মোটরসাইকেল ড্রাইভিং করায় তিনি আমাকে ধন্যবাদ জানান। এটি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের চমৎকার একটি মনোমুগ্ধকর ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যা পুলিশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ করবে। এই ইনোভেটিভ চিন্তার জন্য নব নিযুক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীকে আমাদের পক্ষ থেকেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তবে আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ সড়কের যথাযথ আইন মেনে চলা, বিশেষ করে যারা মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছি তারা যেন অবশ্যই সবসময় হেলমেটসহ গাড়ীর সকল কাগজপত্র সাথে নিয়ে রাস্তায় বের হই।"
পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী-পিপিএম বলেছেন, আমরা যানজট নিরসনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করব এবং নগরবাসী যেন স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারেন সেব্যাপারে আমাদের উদ্যোগ থাকবে। মোটরসাইকেলে যারা যাত্রী হবেন এবং যিনি চালাবেন সবার জন্য কিন্তু হেলমেট পরাটা বাধ্যতামূলক। হেলমেট শুধু আইন মানার বিষয় নয়, এটি জীবন রক্ষাকারী ঢালও। নিরাপদ সড়ক গড়তে প্রত্যেক চালককে নিজের দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে এগিয়ে আসতে হবে। নগরীর ১২ লাখ বাসিন্দারা যানজট থেকে মুক্তি চান জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, সবাই ফুটপাতে নিরাপদে হাটতে চান। আমরা সেরকম একটা পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কাজ করছি। ফুটপাত হকারমুক্ত হবে, রাস্তা যানজট মুক্ত হবে, রাস্তাঘাটে সবাই নির্ভয়ে চলাফেরা করবেন।
পুলিশ ভয়ের প্রতীক নয়— বরং আন্তরিকতার, ভালোবাসার ও শ্রদ্ধার পরিচায়ক। সবাই আইন মানলে, শহরের পরিবেশ হবে ঠিক ফুলের মত সুবাসময়।