অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী জ্বালানি তেলবাহী একটি অয়েল ট্যাংকারের ইনচার্জ ড্রাইভারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে হালিশহর উপকূল থেকে মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল নামে ওই নাবিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ৪৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার টাউন নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তবে তার পিতার বাড়ি সন্দ্বীপে। তিনি গত প্রায় চার বছর ধরে এমটি মার্কেন্টাইল–২১ নামের তেল পরিবহনকারী জাহাজের ইনচার্জ ড্রাইভার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, জাহাজের লোকজন তাকে মেরে সাগরে ফেলে দিয়েছে।
পারিবারিক সূত্র এবং হাতিয়া থানায় রেকর্ড জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের এলজি–৪ জেটি থেকে এমটি মার্কেন্টাইল–২১ নামের জাহাজটি তেল বোঝাই করে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। উক্ত জাহাজের মাস্টারের ডায়েরি মোতাবেক জাহাজটি হাতিয়া থানাধীন চরঈশ্বর কাজীর বাজার নামক স্থানে পৌঁছালে ড্রাইভারকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু ওই জাহাজের মাস্টার বিষয়টি ভিএইচএফে জানাননি। তার জাহাজের চিফ ড্রাইভারকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও এ ব্যাপারে অন্য জাহাজের সহায়তা চাওয়া হয়নি বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
থানায় রেকর্ডকৃত জিডিতে জাহাজটি হাতিয়ার ঘাটে অবস্থান না করে কাজীর বাজার হতে চরগজারিয়া কেন চলে গেল, ইনচার্জ ড্রাইভার মোহাম্মদ মোস্তফা কামালকে খুঁজে না পাওয়ার বিষয়টি তার পরিবার বা তার আত্মীয়–স্বজনকে না জানানোর বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়। জাহাজটি যখন চরগজারিয়ায় অ্যাঙ্কর করে তখন ভিএইচএফে ঘোষণা দেন যে, তার জাহাজের ইঞ্জিনের সমস্যা, তিনি পাইলট হাউজের নিকট অ্যাঙ্কর করবেন। ওইদিনের চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা জাহাজগুলো হতে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয় বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। মোস্তফা কামালের ভাইপো মোহাম্মদ আফসারুল ইসলামের করা গত ২৫ এপ্রিলের জিডিতে তার চাচাকে গুম করা হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়।
এদিকে গতকাল দুপুর নাগাদ হালিশহর উপকূল থেকে মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের নিকট দাবি করা হয়েছে, মোস্তফা কামালকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে। পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জাহাজের মাস্টার রমজান মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সুত্র : আজাদী : ২৮ এপ্রিল ২০২৫